ঝরঝরে চিকেন ফ্রাইড রাইস

ফ্রাইড রাইস

আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করবো রেষ্টুরেন্ট স্টাইলে কিভাবে ফ্রাইড রাইসটা পারফেক্টলি রান্না করতে হয়। ফ্রাইড রাইস তৈরি করার জন্য প্রথমে আমার লাগবে হাড় ছাড়া মুরগির মাংস। তাই ছোট ছোট পিস করে হাড় ছাড়া মুরগির মাংস নিয়েছি ১ কাপ। এভার এটাকে আমি মেরিনেট করবো, প্রথমে দিলাম হাফ চা চামচ সয়া সস, কালো গোল মরিচের গুড়া হাফ চা চামচ। এরপর এগুলাকে  ভালভাবে মেখে ১৫ থেকে ২০ মিনিটের জন্য রেখে দিবো। একটা ফেন এ দিয়ে দিবো প্রায় ৩ টেবিল চামচ সয়াবিন তেল, ১ টেবিল চামচ রসুন কুচি দিয়ে তেলের উপর সামান্য ভেজে নিবো, সামান্য ভাজার পর আমি এখানে এবার চিকেনটাকে দিয়ে দিবো। চিকেনটাকে ৩ থেকে ৪ মিনিটের জন্য ভেজে নিবো। চিকেনটা যখন রান্না হয়ে যাবে তখন চিকেনটা কে একটু সরিয়ে ২ টা ডিম ভেঙ্গে এড করে নিবো। হাফ চা চামচ গোল মরিচের গুড়া এড করে দিচ্ছি আপনারা চাইলে সাদা গোল মরিচও আপনারা দিতে পারেন।

স্বাদমত সামান্য লবন দিতে হবে। ডিমটা ভেজে একটু শক্ত হলে আমি চিকেনগুলার সাথে মেখে নিবো। এবার একটা একটা করে সবজি এড করবো। প্রথমে দিয়ে দিচ্ছি ১ কাপ গাজর কুচি, ১ কাপ বরবটি কুচি, এগুলা দেওয়ার পর কিছুক্ষন চুলায় নাড়াছাড়া করে নিতে হবে যেহেতু এগুলা একটু শক্ত। এরপর ১ কাপ বাধাকপি কুচি, পেঁয়াজ পাতা কুচি ১ কাপ, ৩/৪ টা কাঁচামরিচ কুচি। আপনারা কেমন ঝাল খান তারউপর এই মরিচ কুচি নির্ভর করে আর আপনারা যে কোন সবজি এই ফ্রাইড রাইসে ব্যবহার করতে পারেন। কিছুক্ষন নাড়াছাড়ার পর সবজিগুলা রান্না হলে এখানে আমি এখন রাইস এড করবো। রাইস এড করার আগে আমি এখানে দিয়ে দিবো প্রায় ২৫ গ্রামের মত বাটার, এই বাটারের কারনে রাইসে একটা ফ্লেভার আসবে। বাটার টা রাইস দেওয়ার আগ মুহুর্ত্বে দেওয়া উচিত। এবার রাইসটা দিয়ে দিচ্ছি। দেড় কাপ পলাউর চাল দিয়ে ভাত রান্না করে আমি ওভার নাইট  রেখে দিয়েছিলাম। 

রাইসটা কিভাবে রান্না করছি সেটা লাস্টে আমি বলবো।  এর পর রাইসে দিয়ে দিচ্ছি লাইট সয়া সস, আপনারা ডার্ক সয়া সস ব্যবহার করবেন না, কারন এতে ফ্রাইড রাইসটা কালছে  হয়ে যাবে। টমেটো সস ১ চা চামচ, ভিনেগার ১ চা চামচ, চিনি হাফ চা চামচ। এবার সবকিছুকে ভালভাবে মিক্স করে নিবো। এইটা রান্না করার সময় চুলার হিট টা হাই রাখবেন। এখানে আর আলাদা করে লবন এড করার দরকার নাই। রান্নার শেষ পর্যায়ে আমি এড করে দিবো ১ কাপ সবুজ এবং ১ কাপ হলুদ ক্যাপসিকাম, এই ক্যাপসিকাম রান্না হতে যেহেতু বেশি সময় লাগে না তাই শেষে দিয়ে দিতে হবে। তারপর স্বাদমত সামান্য লবন এড করে দিতে পারেন। অনেকের টেষ্টি সল্ট ভাল লাগে, তাই চাইলে ওটাও ব্যবহার করতে পারেন। আপনারা রান্না করার সময় রাইস এবং সবজির কম্বিনেশানটা ঠিক  রাখবেন। অনেক সময় দেখা যায় রাইসের তুলনায় অতিরিক্ত সবজি ব্যবহার করলে সবজি থেকে যে পানি বের হয় সেটার কারনে রাইসটা ঝরঝরে হয় না। দেখতেও ভাল দেখায় না। তাই আপনারা সবজি এবং চালের পরিমানটা রাখবেন ৩:১। অর্থাৎ ৩ কাপ চালের সাথে ১ কাপ সবজি। আমার ফ্রাইড রাইসটা রান্না করা অলমোষ্ট ডান। এখন পরিবেশন করা পালা। রাইসটা অনেক ঝরঝরে হয়েছে। 

চিকেন ফ্রাইড রাইস

আমি যেভাবে যে উপকরন গুলা ব্যবহার করেছি আপনারা যদি ফলো করেন তাহলে আপনারাও রেষ্টুরেন্ট স্বাদটা নিজের তৈরি করা ফ্রাইড রাইসে পেয়ে যাবেন। এবার এক নজরে দেখে নেওয়া যাক কিভাবে রাইস টা রান্না করা হল। প্রথমে নিয়ে নিলাম চিনিগুড়া পলাউর চাল, আপনারা চাইলে কালো জিরা পলাউর চালটাও ব্যবহার করতে পারেন। একটা বাড়িতে দেড় কাপ চাল নিয়ে নিচ্ছি, চালটাকে ভাল করে ধুয়ে নিতে হবে। চালটাকে ৩/৪ বার পানি পাল্টে ধুয়ে নিবো এরপর একটা ফেন এ পরিমানমন পানি নিয়ে নিবো আর সেই পানিতে দিয়ে দিবো ১ টেবিল চামচের মত সয়াবিন তেল। এই তেলটা ব্যবহারের কারন হচ্ছে চালটা যাতে একটার সাথে আরেকটা লেগে না যায়। পানি যখন ফুটতে শুরু করবে তখন ধুয়ে রাখা চালটা ফুটন্ত পানিতে দিয়ে দিতে হবে। 

আপনারা লক্ষ করবেন যাতে চালটা পুরোপুরি সেদ্ধ করা যাবে না। ৭৫ থেকে ৮০% এর মত সেদ্ধ করবেন। যদি পুরো সেদ্ধ করে ফেলেন তাহলে ফ্রাইড রাইসটা ঝরঝরে হবে না। কিছুটা শক্ত থাকা অবস্থাতে চালটা নামিয়ে রাখতে হবে।  এবং একটা টে তে চাল গুলা ছড়িয়ে রাখবো যাতে চালগুলো দ্রুত ঠান্ডা হয়ে যায়। যখন রাইসটা ঠান্ডা হবে তখন একটা বাটিতে চালটা ফ্রিজে রেখে দিবো ১ রাতের জন্য। আপনারা যারা ফ্রাইড রাইস রান্না করবেন চেষ্টা করবেন আগের দিন রাইসটা রান্না করে ফ্রিজে রেখে দিতে। তো বন্ধুরা আপনার এই রেসিপিটা ফলো করলে আশা করি রেষ্টুরেন্টের মজা আপনারা ঘরে বসেই পেয়ে যাবেন।

Post a Comment

0 Comments